জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই গঠিত হতে যাচ্ছে একটি নতুন ইসলামী রাজনৈতিক জোট, যেখানে প্রাথমিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আটটি দল। এই জোটের লক্ষ্য, ভোটের মাঠে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা এবং বিএনপির বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা।
নতুন জোটে যেসব দল
নতুন সম্ভাব্য ইসলামী জোটে এখন পর্যন্ত যেসব দল আলোচনায় রয়েছে:
১. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
২. ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
৩. বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
৪. জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ
৫. খেলাফত মজলিস
৬. নেজামে ইসলাম পার্টি
৭. ইসলামী ঐক্যজোট
৮. খেলাফত আন্দোলন
এছাড়াও এনসিপি (ন্যাশনাল কনসেন্সাস পার্টি), এবি পার্টি এবং গণঅধিকার পরিষদ—এই তিন দলও জোটে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের যোগদানের ফলে জোটের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক পরিসর আরও বিস্তৃত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জুলাই সনদ ও নির্বাচনী দাবি
জোটের প্রায় সব দলই বর্তমানে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট শর্তে একমত হয়েছে—তাদের দাবি, নির্বাচনের আয়োজন হতে হবে জুলাই সনদের ভিত্তিতে এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এ বিষয়ে বলেন:
“ফ্যাসিবাদ আমলে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচন হচ্ছে, তাতে আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। তাই জুলাই সনদের সিদ্ধান্তকে আইনি ভিত্তি দিয়ে সরকারের অধীনেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।”
ভোটের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ
ইসলামী দলগুলোর অভিযোগ—বর্তমানে নির্বাচনের মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমান সুযোগ তৈরি হয়নি। বরং, একতরফা নির্বাচনের পূর্বাভাস স্পষ্ট। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি ভোটের পরিবেশ প্রতিযোগিতামূলক না হয়, তাহলে তারা এই ‘প্রহসনের নির্বাচন’ প্রতিহত করবে।
রাজনৈতিক বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এই জোটের উদ্ভব এমন এক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, যেখানে আওয়ামী লীগবিহীন একটি নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল একটি বিকল্প ধারা গঠনের চেষ্টা করছে।
ইতোমধ্যেই এই দলগুলো নিজেদের সভা-সমাবেশে জোটের রূপরেখা উপস্থাপন করছে। তফসিল ঘোষণার পরেই এই জোটের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলে জানা গেছে।
সংক্ষেপে:
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন ইসলামী জোটের উত্থান হতে যাচ্ছে, যার লক্ষ্য একদিকে সরকারবিরোধী শক্তি হিসেবে সংগঠিত হওয়া, অন্যদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্তসাপেক্ষে বিকল্প শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা।