কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা ইউনিয়নের আউজিয়া গ্রামে অনলাইন জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষে আল আমিন (২৮) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত আল আমিন ওই গ্রামের মৃত দেওয়ান আলীর ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অনলাইন জুয়া খেলায় বাধা প্রদানকে কেন্দ্র করে আল আমিনের সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আল আমিনসহ তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাড়াইল থানায় সোপর্দ করে।
পরে আল আমিন অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ তাকে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেয়ার পথে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আল আমিনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছা: দিলুয়ারা আক্তার বাদী হয়ে শামীম মিয়া, আলাল উদ্দিন, এরশাদ মিয়া, জসিম উদ্দিন, মো. ফরিদ মিয়া, সোহেল মিয়া, জুয়েল মিয়াসহ মোট ৩০ জনকে আসামি করে তাড়াইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের স্বজনদের অভিযোগ—হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তারা বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছেন। এই সুযোগে বাদীপক্ষের লোকজন তাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।
আসামি জসিম উদ্দিনের স্ত্রী মোসাম্মৎ পারভীন বলেন, “বাদীপক্ষের সোহরাব ও বাবুল মিয়া বিবাদী ফরিদ মিয়ার দোকানে গিয়ে টাকা ধার চান। ফরিদ মিয়া টাকা না দিলে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এরপর মসজিদের ফান্ডের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘর্ষ হয়। এতে কেউ গুরুতর আহত হয়নি। কিন্তু আল আমিনের মৃত্যুর পর আমাদের ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র, গবাদি পশু, ধান-চাল, স্বর্ণালংকার, মোটরসাইকেল, পাওয়ার টিলারসহ যা কিছু ছিল সব লুট করে নিয়ে গেছে।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আবুল হাসেম বলেন, “ঘটনার দিন আমি কিশোরগঞ্জে ছিলাম। রাত ১২টার দিকে খবর পাই। পরদিন সকালে গিয়ে দেখি আসামিপক্ষের কয়েকজন ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। প্রশাসনের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করা হয়। লুটপাটের বিষয়ে শুনেছি, তবে নিজে প্রত্যক্ষ করিনি।”
তাড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাব্বির রহমান বলেন, “আল আমিন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মোবারক মিয়াকে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন। আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর বা লুটপাটের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ কাজ করছে।”
সম্পাদক: মোহাম্মদ সোলায়মান প্রকাশক: এনামুল হক জুনায়েদ
কিশোরগঞ্জ সদর, কিশোরগঞ্জ।
যোগাযোগ: ০১৯০৭-৮৩৬৮০৮, ইমেইল: newsnagar@gmail.com
নিউজ নগর