স্টাফ রিপোর্টার: আবু সালমান
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নে মামলা তুলে না নেওয়ায় বাদীকে শারীরিক নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নার্গিস আক্তার বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে, সদর উপজেলার বাসু বাজার সংলগ্ন হাসন্দী গ্রাম এলাকায়, লক্ষ্মীপুর-রামগঞ্জ সড়কের পাশে।
মামলার বাদী নার্গিস আক্তার জানান, প্রায় দেড় বছর আগে স্বামী মো. আরিফ হোসেন ব্যবসার জন্য তার কাছ থেকে আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার করা টাকা নেন। কিন্তু ব্যবসা ব্যর্থ হওয়ার অজুহাতে তিনি টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন এবং স্থানীয় সন্ত্রাসী ইসমাইলের সহায়তায় বাড়ি থেকে বের করে দেন।
ন্যায়বিচারের আশায় নার্গিস আক্তার ঢাকা জজ কোর্টে মামলা দায়ের করেন। কিছুদিন পর স্থানীয়রা তাকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেন। এরপর তিনি উত্তর হামছাদী ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দেন (মামলা নং: ১৪১/২৫)। চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের কথা শুনে নার্গিস আক্তার টাকা পাওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। কিন্তু অভিযুক্ত আরিফ হোসেন টাকা পরিশোধ না করে চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
নার্গিস আক্তার জানান, চেয়ারম্যান পরবর্তীতে তাকে প্রতিবেদন দেওয়ার আশ্বাস দেন। গত ৬ অক্টোবর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রতিবেদন নিয়ে তিনি বাসু বাজার থেকে সিএনজিযোগে লক্ষ্মীপুর শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
বাজার থেকে প্রায় তিনশ গজ দূরে পৌঁছালে তার শ্বশুর শাহাবুদ্দিন সিএনজি থামিয়ে কথা বলার কথা বলে নামিয়ে নেন। সিএনজি চলে যাওয়া মাত্রই ইসমাইল সুপারি বাগান থেকে এসে তার মুখ চেপে ধরে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় আরিফ হোসেনসহ আরও ৪-৫ জন এসে নার্গিসকে বেধড়ক মারধর করে, গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।
তিনি আরও জানান, “ইসমাইল আমার মাথায় আঘাত করতে গেলে আদলের ঘায়ে আমার কোমরের হাঁড় ভেঙে যায়। তারা আমার সঙ্গে থাকা ১৫,২০০ টাকা, কানের দুল, গলার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে।”
তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় এক সিএনজি চালক তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি চারদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর ১১ অক্টোবর লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে নার্গিস আক্তার বলেন,
“আমার মা-বাবা কেউ নেই। আমি ন্যায়বিচার চাইতে গিয়ে বারবার নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আদালতে মামলা দেওয়া কি অপরাধ? তাহলে কি আমি বিচার পাবো না? তারা কি আমাকে বাঁচতে দেবে না।