তানিম আহমেদ নালিতাবাড়ী শেরপুর প্রতিনিধি
এক পাশে খরস্রোতা ভোগাই নদী, অপর পাশে বসতবাড়ি। মাঝ দিয়ে চলাচলের একমাত্র কাঁচা রাস্তা—যে রাস্তায় ভরসা করে জীবনযাপন করে আসছিল নালিতাবাড়ী পৌরসভার গোবিন্দনগর ছয়আনীপাড়া এলাকার প্রায় ৩০টি পরিবার। কিন্তু সেই রাস্তাটির মাঝখানে টিনের বেড়া তুলে চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় এখন বিপাকে পড়েছে দুই শতাধিক মানুষ।
এলাকাবাসী জানায়, বহু বছর ধরে ওই কাঁচা রাস্তা দিয়েই স্থানীয়রা বাজার, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও পৌরশহরে যাতায়াত করে আসছিলেন। হঠাৎই স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন ও জুয়েল মিয়া রাস্তা নিজেদের ব্যক্তিমালিকানাধীন দাবি করে টিনের দেয়াল তুলে দেন। এতে শিশু-কিশোরদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে পড়েছে, কৃষকরা আখ, কলা ও সবজি বাজারে নিতে পারছেন না।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলাচলের রাস্তার মাঝখানে টিনের বেড়া তুলে পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি রাস্তার ওপর ঘর নির্মাণের জন্য খুঁটিও পোঁতা হয়েছে। ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন স্কুল বা মাদরাসার পথে গিয়ে ফিরে আসছে। স্থানীয়রা এখন বিকল্প পথ ধরে ঘুরে বড় সড়কে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন।
গোবিন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লিমা আক্তার (৯) জানায়,এক সপ্তাহ ধরে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই আমরা স্কুলে যেতে পারছি না। আমরা স্কুলে যেতে চাই—রাস্তাটা খুলে দেওয়া হোক।
গোবিন্দনগর মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসার পরিচালক হাফিজুল ইসলাম বলেন,আমার মাদরাসার প্রায় দেড়শো ছাত্র এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করত। টিনের বেড়া তুলে দেওয়ায় এখন কেউই আসতে পারছে না। এতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। উপরন্তু রাস্তা বন্ধকারীরা আমাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
স্থানীয় ইউসুফ আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,এটা আমাদের গ্রামের একমাত্র রাস্তা। এখন টিনের দেয়াল তোলায় আমরা অন্যের বাড়ির ভেতর দিয়ে ঘুরে যেতে বাধ্য হচ্ছি। এভাবে আর কতোদিন।
তবে অভিযুক্ত জুয়েল মিয়া বলেন,রাস্তার জায়গাটা আমাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন। জোর করে মানুষ চলাচল করত। আমরা আদালতের রায় অনুযায়ী দেয়াল তুলেছি, এতে কোনো অন্যায় করিনি।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা আক্তার ববি বলেন,মানুষ যে রাস্তা দিয়ে দীর্ঘদিন চলাচল করে, তা কেউ ব্যক্তিগতভাবে বন্ধ করতে পারে না। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই।