হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ২০ বছর বয়সী এক অনার্স পড়ুয়া তরুণীর আত্মহত্যার পর তার মরদেহ মর্গে নিয়ে যাওয়ার সময় ভয়াবহ এক ঘটনা ঘটে। থানার হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃতদেহটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, গত ১৯ অক্টোবর হালুয়াঘাটের ওই তরুণী নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন। দুই পাতার একটি সুইসাইড নোটে তিনি লিখে গিয়েছিলেন—
“আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী আমার দুর্ভাগ্য। আমার মৃত্যুর কোনো কারণ নেই। এই দুনিয়া থেকে আমার মন উঠে গেছে, তাই আমি চলে যাচ্ছি।”
এ ঘটনায় হালুয়াঘাট থানা পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা (UD Case) দায়ের করে এবং মৃতদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মর্গে নরকীয় ঘটনা
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে লাশ আনা–নেওয়ার দায়িত্বে থাকা আবু সাঈদ নামে এক ব্যক্তি, যিনি প্রায় তিন বছর ধরে থানা থেকে মর্গে লাশ পরিবহনের কাজ করে আসছিলেন, প্রথমে লাশ রেখে চলে যান। কিন্তু কিছুক্ষণ পর সুরতহাল রিপোর্ট নেওয়ার কথা বলে ফের মর্গে প্রবেশ করেন।
পরে কর্তব্যরত ডোম মর্গের ভেতর অন্ধকার দেখে লাইট জ্বালালে আবু সাঈদ ও তার সহযোগীকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখেন। তাদের আচরণে সন্দেহ হলে তিনি ডিউটি ডাক্তারকে খবর দেন। পরে ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়।
গ্রেফতার ও মামলা
এ ঘটনায় পুলিশ দ্রুত আবু সাঈদকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মৃতদেহ অবমাননার মামলা করা হয়েছে।
একটি রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি
এই ঘটনা সমাজে গভীর প্রশ্ন তুলেছে—
যে তরুণী জীবিত অবস্থায় নিজের জীবন নিয়ে হতাশ হয়েছিল, মৃত্যুর পরও সে নিরাপদ রইল না।
আইন, নৈতিকতা ও মানবিকতার এই ভয়াবহ অবক্ষয় আমাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর এক নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরছে। এমনকি মর্গে রাখা একটি লাশও যদি নিরাপত্তা না পায়—তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, আমরা আসলে কতটা সভ্য হয়েছি?



















